পাঠ-৬: ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন (Wireless Communication) সিস্টেম | Bluetooth, WiFi এবং WiMAX

Wireless Communication
Facebook
WhatsApp
Print

ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন (Wireless Communication) সিস্টেম

ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন সিস্টেমঃ একাধিক ডিভাইসের মধ্যে কোন ফিজিক্যাল সংযোগ ব্যতীত ডেটা ট্রান্সফার করার পদ্ধতি হলো ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন (Wireless Communication) সিস্টেম । এই সিস্টেমের সাহায্যে রিমোট কন্ট্রোল, মাউস, কি-বোর্ড, হেডফোন, স্পিকার, প্রিন্টার, মোবাইল ফোন, রেডিও ইত্যাদি ব্যবহার করা যায়।

গুরুত্বপূর্ণ ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন সিস্টেম:
  • টেলিভিশন এবং রেডিও সম্প্রচার
  • স্যাটেলাইট যোগাযোগ
  • রাডার
  • মোবাইল টেলিফোন সিস্টেম (সেলুলার যোগাযোগ)
  • Global Positioning System (GPS)
  • ইনফ্রারেড যোগাযোগ
  • WLAN (Wi-Fi)
  • ব্লুটুথ(Bluetooth)
  • পেজিং
  • কর্ডলেস ফোন
  • Radio Frequency Identification (RFID)

ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন (Wireless Communication) সিস্টেমগুলোকে আবার সিমপ্লেক্স, হাফ ডুপ্লেক্স এবং ফুল ডুপ্লেক্স হিসাবে শ্রেণিবদ্ধ করা যেতে পারে।

ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন সিস্টেমের প্রয়োজনীয়তাঃ 

১। নেটওয়ার্কের অন্তর্ভুক্ত যেকোন স্থানে ওয়্যারলেস ডিভাইস সহজে বহন করা যায়।

২। দূর্গম এলাকায় যেখানে তার সংযোগ সম্ভব নয় সেখানে ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন (Wireless Communication) সিস্টেমের মাধ্যমে যোগাযোগ স্থাপন করা হয়।

ICT অধ্যায় ভিত্তিক নোট ডাউনলোড করতে ক্লিক করো

ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন সিস্টেমের সুবিধাঃ 

১। বহনযোগ্য ডিভাইসের ক্ষেত্রে সংযোগ পদ্ধতি সহজ।

২। ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন সিস্টেমে (Wireless Communication) নয়েজ এর প্রভাব খুবই কম।

৩। তার মাধ্যমের তুলনায় ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন সিস্টেমের সাহায্যে নেটওয়ার্ক স্থাপন সহজ।

৪। তারযুক্ত কমিউনিকেশন সিস্টেমের তুলনায় ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন (Wireless Communication) সিস্টেমের সামগ্রিক ব্যয় হ্রাস করা হয়।

৫। ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন (Wireless Communication) সিস্টেমে সংযোগের ক্ষেত্রে কোন পোর্ট ব্যবহৃত হয় না। তাই অধিক সংখ্যক ব্যবহারকারীর সাথে সংযুক্ত থাকা যায়।

ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন (Wireless Communication) সিস্টেমের অসুবিধাঃ 

১। তারযুক্ত নেটওয়ার্কের তুলনায় গতি কম।

২। ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন সিস্টেমে ব্যবহৃত প্রযুক্তি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।

৩। প্রতিবন্ধক অনেকসময় ডেটা চলাচলের ক্ষেত্রে বাধা সৃস্টি করে।

ওয়্যারলেস কমিউনিকেশনের ক্ষেত্রে দুই ধরণের অ্যাকসেস পয়েন্ট ব্যবহৃত হয়। যথাঃ

১। মোবাইল নেটওয়ার্ক (Mobile Network)

See also  পাঠ-৪: তার মাধ্যম | টুইস্টেড পেয়ার, কো-এক্সিয়েল ও ফাইবার অপটিক ক্যাবল (Data Communication Medium)

২। হটস্পট (Hotspot)

হটস্পট( Hotspot): হটস্পট হচ্ছে এক ধরনের ওয়্যারলেস নেটওয়ার্ক। হটস্পট তৈরির জন্য জনপ্রিয় তিনটি প্রযুক্তি-

  • ব্লু-টুথ ( Bluetooth )
  • ওয়াই-ফাই ( Wi-Fi )
  • ওয়াইম্যাক্স ( WiMAX )

ICT অধ্যায় ভিত্তিক নোট ডাউনলোড করতে ক্লিক করো

ব্লু-টুথ ( Bluetooth ): ব্লুটুথ হচ্ছে একটি ওয়্যারলেস প্রযুক্তি যার মাধ্যমে একটি ওয়্যারলেস পার্সোনাল এরিয়া নেটওয়ার্ক (WPAN)  তৈরি করা যায়। এর কভারেজ এরিয়া সাধারণত ১০ থেকে ১০০ মিটার হয়ে থাকে। বর্তমানে প্রায় সকল ইলেকট্রনিক ডিভাইসে ব্লুটুথ বিল্ট-ইন থাকে। তবে বিভিন্ন ডিভাইসে USB পোর্টের মাধ্যমেও  ব্লুটুথ সংযোগ দেওয়া যায়। ১৯৯৪ সালে টেলিকম ভেন্ডর এরিকসন ব্লুটুথ উদ্ভাবন করে। দশম শতাব্দির ডেনমার্কের রাজা হারাল্ড ব্লুটুথ এর নামানুসারে এ প্রযুক্তিটির নাম রাখা হয়েছে  ব্লুটুথ।

bluetooth

ব্লুটুথের সুবিধাঃ

১। এটি ওয়্যারলেস।

২। এটি দামে সস্তা।

৩। এটি ইনস্টল করা সহজ।

৪। ডিভাইসের সাথে Bluetooth ইনস্টল করা থাকলে এটি বিনামূল্যে ব্যবহার করা যায়।

ব্লুটুথের অসুবিধাঃ

১। এটি একটি স্বল্প পরিসীমা যোগাযোগের নেটওয়ার্ক।

২। এটি একইসময় মাত্র দুটি ডিভাইস সংযুক্ত করে।

ব্লুটুথের  ব্যবহারঃ

১। Bluetooth ব্যবহার  করে কম্পিউটার, মোবাইল ফোন বা যেকোন bluetooth সাপোর্টেড ডিভাইসের সংযোগ ঘটানো যায় এবং তথ্য আদান-প্রদান করা যায়।

২। কম্পিউটার, মোবাইল ফোন বা যেকোন bluetooth সাপোর্টেড ডিভাইসের সাথে ইনপুট ও আউটপুট ডিভাইসগুলোর  তারবিহীন যোগাযোগে ব্লুটুথ ব্যবহৃত হয়।

৩। জিপিএস রিসিভার, চিকিৎসা যন্ত্রপাতি, বারকোড স্ক্যানার ও ট্রাফিক কন্ট্রোল ডিভাইসগুলোতে ব্লুটুথ ব্যবহৃত হয়

ICT অধ্যায় ভিত্তিক নোট ডাউনলোড করতে ক্লিক করো

৪। ডেডিকেটেড টেলিহেলথ ডিভাইসগুলোতে হেলথ সেন্সর ডেটাগুলোর শর্ট রেঞ্জ ট্রান্সমিশনে ব্লুটুথ ব্যবহৃত হয়।

৫। প্রায়ই ইনফ্রারেড ব্যবহৃত হয় এমন স্থানে নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে ব্লুটুথ ব্যবহৃত হয়।

ওয়াই-ফাই(Wi-Fi):

Wi-Fi শব্দটি Wireless Fidelity শব্দের সংক্ষিপ্ত রূপ। ওয়াই-ফাই হলো জনপ্রিয় একটি তারবিহীন নেটওয়ার্কিং প্রযুক্তি যা রেডিও ওয়েব ব্যবহার করে থাকে। এর এরিয়া একটি কক্ষ, একটি ভবন কিংবা সাধারণত ইনডোরের ক্ষেত্রে এ দূরত্ব ৩২ মিটার এবং আউটডোরের ক্ষেত্রে ৯৫ মিটারের মতো এলাকা জুড়ে হতে পারে।  ওয়াই-ফাই  এনাবল্ড কোনো ডিভাইস যেমন-  একটি পার্সোনাল কম্পিউটার, ভিডিও গেম কনসোল, স্মার্টফোন কিংবা ডিজিটাল অডিও প্লেয়ার প্রভৃতি একটি ওয়্যারলেস নেটওয়ার্ক অ্যাকসেস পয়েন্টের মাধ্যমে  ইন্টারনেটের সাথে যুক্ত হতে পারে।

See also  পাঠ-৮: কম্পিউটার নেটওয়ার্কিং (Computer Network) | PAN, LAN, CAN, MAN, WAN

wifi

ওয়াই-ফাই এর বৈশিষ্ট্য: 

১। ওয়াই-ফাই IEEE 802.11 স্ট্যান্ডার্ডের প্রযুক্তি।

২। ওয়াই-ফাই রেডিও ওয়েব ব্যবহার করে থাকে।

৩। ওয়াই-ফাই প্রযুক্তির ডেটা ট্রান্সমিশন মোড হাফ-ডুপ্লেক্স।

ওয়াই-ফাই এর সুবিধা:

১। Wi-Fi প্রযুক্তি ব্যবহার করে একই সাথে একাধিক কম্পিউটারে ইন্টারনেট সংযোগ দেয়া যায়।

২। নেটওয়ার্কের জন্য কোনো লাইসেন্স বা কর্তৃপক্ষের অনুমোদনের প্রয়োজন হয় না।

৩। নেটওয়ার্ক সহজে নতুন ব্যবহারকারী যুক্ত করে নেটওয়ার্কের পরিধি বাড়ানো যায়।

৪। ওয়াই-ফাই লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্কের তুলনায় তুলনামূলকভাবে সস্তা এবং খুব সহজেই ব্যবহার করা যায়।

ICT অধ্যায় ভিত্তিক নোট ডাউনলোড করতে ক্লিক করো

ওয়াই-ফাই এর অসুবিধা:

১। Wi-Fi নেটওয়ার্কের সীমানা নির্দিষ্ট এলাকা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকে।

২। নেটওয়ার্কের দক্ষতা ও গতি তুলনামূলকভাবে কম।

৩। বিদ্যুৎ খরচ অন্যান্য স্ট্যান্ডার্ডের তুলনায় বেশি।

৪। অন্যান্য ডিভাইস কর্তৃক সিগন্যাল জ্যাম বা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হতে পারে।

৫। ডেটা ও নেটওয়ার্কের নিরাপত্তা ঝুঁকি থেকে যায়।

৬। দূরত্ব বেশি হলে নেটওয়ার্কের গতি ও সিগন্যালের গুণগত মান উল্লেখযোগ্যহারে কমে যেতে পারে।

৭। অজ্ঞাত বা অনুমোদিত ব্যক্তি কর্তৃক অ্যাক্সেস পয়েন্ট ব্যবহারের ঝুঁকি থাকে।

ওয়াইম্যাক্স(WiMAX): 

WiMAX  এর পূর্ণরূপ হচ্ছে Worldwide Interoperability for Microwave Access। ওয়াইম্যাক্স প্রযুক্তির মাধ্যমে উচ্চ  গতির ব্রডব্যান্ড সেবা, তারবিহীন ব্যবস্থায় বিস্তৃত এলাকাজুড়ে ইন্টারনেট অ্যাকসেস করার সুযোগ পাওয়া যায়।WiMAX এর দুটি প্রধান অংশ রয়েছে। একটি হচ্ছে WiMAX এর বেস স্টেশন যা ইনডোর ও আউটডোর টাওয়ার নিয়ে গঠিত। অন্যটি হচ্ছে এন্টিনাসহ WiMAX রিসিভার, যা কোনো কম্পিউটার বা ল্যাপটপে সংযুক্ত থাকে। একটি WiMAX বেস স্টেশন সাধারণত ১০ কিমি হতে শুরু করে ৬০ কিমি পর্যন্ত ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট অ্যাক্সেস সুবিধা দিয়ে থাকে।

WiMAX

ওয়াইম্যাক্স এর বৈশিষ্ট্যঃ 

১। ওয়াইম্যাক্স IEEE 802.16 স্ট্যান্ডার্ডের প্রযুক্তি।

২। এই প্রযুক্তিতে ডেটা ট্রান্সমিশন রেট 70Mbps।

ICT অধ্যায় ভিত্তিক নোট ডাউনলোড করতে ক্লিক করো

৩। এই প্রযুক্তিতে মাইক্রোওয়েব ব্যবহৃত হয়।

See also  পাঠ-১০: নেটওয়ার্ক টপোলজি (Network Topology) | বাস, রিং, স্টার, ট্রি, মেশ ও হাইব্রিড টপোলজি

৪। ওয়াইম্যাক্স প্রযুক্তির ডেটা ট্রান্সমিশন মোড ফুল-ডুপ্লেক্স।

ওয়াইম্যাক্স এর সুবিধা:

১। কভারেজ এরিয়া সাধারণত ১০ কিমি হতে শুরু করে ৬০ কিমি পর্যন্ত হয়ে থাকে।

২। একক একটি স্টেশনের মাধ্যমে হাজার হাজার ব্যবহারকারীকে ইন্টারনেট সেবা দেয়া যায়।

৩। ফ্রিকোয়েন্সি ব্যান্ড লাইসেন্স বা লাইসেন্সবিহীন উভয়ই হতে পারে।

৪। প্রত্যন্ত অঞ্চলেও সেবা পাওয়া যায়; এমনকি যেখানে ফোনের সংযোগ পৌঁছেনি সেখানেও।

৫। কোয়ালিটি অব সার্ভিসের নিশ্চয়তা দেয়।

৬। তথ্য ও টেলিযোগাযোগ প্রযুক্তির সেবাগুলো প্রদান করা যায়।

৭। এন্টিনাসহ WiMAX রিসিভার, যা কোনো কম্পিউটার বা ল্যাপটপে সংযুক্ত থাকে। ফলে পোর্টেবিলিটি সুবিধা পাওয়া যায়।

ওয়াইম্যাক্স এর অসুবিধা:

১। দূরত্ব বেশি হলে একাধিক বেজ স্টেশনের প্রয়োজন হয়।

২। নেটওয়ার্কের অন্যান্য ওয়্যারলেস ডিভাইস সিগন্যালে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে।

৩। সংস্থাপন এবং রক্ষণাবেক্ষণ খরচ বেশি।

৪। অনেক ব্যবহারকারী একই টাওয়ার অ্যাক্সেস করায় সার্ভিসের সঠিক গুণগত মান বজায় রাখা অনেক ক্ষেত্রে কঠিন।

৫। অন্যান্য নেটওয়ার্ক যেমন- ফাইবার অপটিক, স্যাটেলাইট, ক্যাবল ইত্যাদির সাথে তুলনা করলে ওয়াইম্যাক্স এর ডেটা রেট অত্যন্ত ধীরগতির।

৬। খারাপ আবহাওয়া যেমন বৃষ্টির কারণে এর সিগন্যালে বিঘ্ন ঘটতে পারে।

৭। বেশি বিদ্যুৎশক্তি ব্যবহারকারী প্রযুক্তি যার ফলে নেটওয়ার্ক চালানোর জন্য পর্যাপ্ত বিদ্যুতের সরবরাহ নিশ্চিত করতে হয়।

ICT অধ্যায় ভিত্তিক নোট ডাউনলোড করতে ক্লিক করো

Facebook
WhatsApp
Print

২য় অধ্যায়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

HSC ICT - ২য় অধ্যায়

HSC ICT - সকল অধ্যায়

ICT - ১ম অধ্যায়
ICT - ২য় অধ্যায়
ICT - ৩য় অধ্যায়
ICT - ৪র্থ অধ্যায়
ICT - ৫ম অধ্যায়
ICT - ৬ষ্ঠ অধ্যায়
Scroll to Top

২য় অধ্যায়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

HSC ICT - ২য় অধ্যায়

HSC ICT - সকল অধ্যায়

ICT - ১ম অধ্যায়
ICT - ২য় অধ্যায়
ICT - ৩য় অধ্যায়
ICT - ৪র্থ অধ্যায়
ICT - ৫ম অধ্যায়
ICT - ৬ষ্ঠ অধ্যায়